1. admin@narsingdirkanthosor.com : admin :
বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫, ০৮:৩৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
শিবপুরে নিখোঁজের ছয়দিন পর অটোরিকশা চালকের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার নরসিংদী জেলা ইসলামী যুব আন্দোলনের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মুসাকে বদলী, তার বদলী শাস্তিমূলক কি না জনমনে প্রশ্ন নরসিংদীতে ১২শ মানুষকে ইফতার করালেন ইউনিয়ন মুজাহিদ কমিটি চাঁদাবাজ, ধর্ষক ও খুনিদের ছাড় দেওয়া চলবে না: বিএনপি নেতা জুয়েল পলাশে ইটভাটাকে মোবাইল কোর্টে অর্ধলক্ষ টাকা জরিমানা ঘোড়াশালে ট্রেনে কাটা পড়ে যুবদল নেতার মৃত্যু ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ডের দাবিতে নরসিংদীতে শহীদ জিয়া পরিষদের মানববন্ধন পলাশে অটোরিকশা ভাড়া করা নিয়ে বিরোধ, যুবককে কুপিয়ে হত্যা মনোহরদীতে মোবাইল কোর্টে আনোয়ার ফিলিং স্টেশনকে জরিমানা

নরসিংদী পাক হানাদার মুক্ত দিবস আজ

সাব্বির হোসেন | নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিতঃ মঙ্গলবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৩
  • ১৯০ বার

সাব্বির হোসেন, নিজস্ব প্রতিবেদক : আজ ১২ ডিসেম্বর নরসিংদী পাক হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের ১২ ডিসেম্বর পাক হানাদার বাহিনীর পরাজয় ও আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে নরসিংদী মুক্ত হয়। সম্মিলিত মুক্তি বাহিনীর প্রবল প্রতিরোধের মুখে গোটা জেলা পাক হানাদার মুক্ত হয়। তাই মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে দিনটি নরসিংদীবাসীর কাছে অত্যন্ত গৌরবোজ্জল ও স্মরণীয় একটি দিন।

জানা যায়, ১৯৭১ সালে দীর্ঘ ৯ মাস নরসিংদী জেলার বিভিন্ন স্থানে শতাধিক খন্ড যুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনীর নির্মমতার শিকার হয়ে শহীদ হয়েছেন ১১৬ জন বীর সন্তান। এদের মধ্যে নরসিংদী সদর উপজেলায় ২৭ জন, রায়পুরায় উপজেলায় ৩৭ জন, বেলাব উপজেলায় ১৬ জন, মনোহরদী উপজেলায় ১২ জন, শিবপুর উপজেলায় ১৩ জন ও পলাশ উপজেলায় ১১ জন। এছাড়াও অনেক মা- বোনের নিরব আত্মত্যাগের বিনিময়ে নরসিংদী হানাদার মুক্ত হয়।

স্বাধীনতা যুদ্ধে ঢাকার সন্নিকটে অবস্থিত নরসিংদীতেও মুক্তিযোদ্ধারা পিছিয়ে থাকেনি। দেশ মাতৃকার ডাকে সারা দিয়ে ৭১’এর সশস্ত্র সংগ্রামে ঝাপিয়ে পড়েছিল জেলার আপামর জন সাধারণ। অস্ত্র হাতে রুখে দাঁড়িয়ে ছিল পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে।

নরসিংদীর ৬টি উপজেলায় মুক্তিযুদ্ধে যারা সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন, সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত আব্দুল মান্নান ভূইয়া, প্রয়াত সাংসদ আফতাব উদ্দিন ভূইয়া, সাবেক মন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহম্মেদ রাজু, সাবেক সাংসদ মেজর (অবঃ) সামসুল হুদা বাচ্চু, সাবেক সাংসদ অধ্যাপক সাহাবুদ্দিন,

সাবেক সাংসদ সরদার শাখাওয়াত হোসেন বকুল, সাবেক সাংসদ আব্দুল আলী মৃধা, নেভাল সিরাজ উদ্দিন আহম্মেদ, ফজলুর রহমান ফটিক মাস্টার, আজিজুর রহমান ভুলু, মজনু মৃধা, আব্দুল রাজ্জাক ভূইয়া, কাজী হাতেম আলী, প্রয়াত হাজী গয়েছ আলী মাস্টার, প্রয়াত নূরুল ইসলাম কাঞ্চন, আলী আকবর, মোঃ আমানুল্লাহ, সিরাজুল হক,

তাজুল ইসলাম খাঁন, অধ্যাপক মোঃ ইউনুছ, আব্দুল মোতালিব পাঠান, মীর এমদাদ, মোঃ নুরুজ্জামান, আব্দুল লতিফ, হাবিবুল্লাহ বাহার, মনছুর আহম্মেদ, আলী আকবর সরকার, নুরুল ইসলাম গেন্দু প্রমুখ।

স্বাধীন মাতৃভূমি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তারা মার্চ মাস থেকেই সশস্ত্র যুদ্ধের প্রস্তুতি শুরু করে পাক বাহিনীর অন্তরাত্মা কাপিয়ে দেয়। মুক্তি বাহিনীর প্রবল আক্রমণের মুখে টিকতে না পেরে ৭১ সালের ১২ ডিসেম্বর পাক বাহিনীর পরাজয় ও আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে নরসিংদী পাক হানাদার মুক্ত হয়। নরসিংদীর মুক্তি পাগল মানুষের মনে এ দিনটি আজও স্মরণীয় দিন।

৭১’এর মার্চে ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের একটি কোম্পানী হানাদার বাহিনীকে প্রতিরোধ করতে নরসিংদীতে ইপিআর, আনসার ও পুলিশ বাহিনীর সাথে মিলিত হয়। এতে হাজার হাজার ছাত্র জনতা তাদেরকে স্বাগত জানায়। নরসিংদী জেলার বিভিন্ন স্থানে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র খুলে শত শত যুবকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। পরে শুরু হয় প্রতিবাদ, প্রতিরোধ ও চোরাগুপ্তা হামলা।

স্থলপথে মুক্তিবাহিনীর প্রবল প্রতিরোধে টিকতে না পেরে ৪ এপ্রিল পাক বাহিনীর বোমারু বিমান নরসিংদী শহরে বোমাবর্ষন শুরু করে। তখন গোটা শহরে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হয়। বিমান বাহিনীর বোমা বর্ষণে শহীদ হন আব্দুল হক ও নারায়ন চন্দ্র সাহাসহ নাম না জানা আরো ৮ জন। ২৩ মে তৎকালীন মুসলীম লীগ নেতা মিয়া আব্দুল মজিদ মুক্তি সেনাদের গুলিতে নিহত হন। এর পরেই পাকবাহিনী নরসিংদী টেলিফোন ভবনে ঘাটি স্থাপন করে।

এসময় স্থানীয় টাউট, দালাল ও রাজাকারদের যোগসাজসে হানাদার বাহিনীরা প্রতিদিন চালায় ধর্ষণ, নরহত্যা ও লুটতরাজ। অপরদিকে বাংলার মুক্তি পাগল ছেলেরা প্রতিরোধের প্রস্তুতি নেয় এবং আঘাত হানে শত্রু “শিবিরে। নরসিংদী সদর উপজেলায় নেভাল সিরাজের নেতৃত্বে হানাদার প্রতিরোধ দূর্গ গড়ে তোলা হয়। ওই স্থান থেকে সমগ্র জেলায় মুক্তিযোদ্ধারা নিরলসভাবে তৎপরতা অব্যাহত রাখেন।

মুক্তিযুদ্ধে নরসিংদী জেলা ছিল ২নং সেক্টরের অধীনে। সেক্টর কমান্ডার ছিলেন তৎকালীন মেজর জেনারেল কে এম শফিউল্লাহ। নরসিংদীকে ৩ নং সেক্টরের অধীনে নেয়া হলে কামান্ডার হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন মোঃ নূরুজ্জামান। এ জেলায় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিকে সমুন্নত রাখতে স্বাধীনতার ৩৪ বছর পর ২০০৫ সালে নরসিংদী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিফলক নির্মিত হয়।

আরো খবর..
© নরসিংদীর কন্ঠস্বর
Developed By Bongshai IT